মল্লরাজাদের মাটিতে রাস উৎসবকে কেন্দ্র করে মাতোয়ারা স্থানীয়রা : উৎসবের আবহ

30th November 2020 8:04 pm বাঁকুড়া
মল্লরাজাদের মাটিতে রাস উৎসবকে কেন্দ্র করে মাতোয়ারা স্থানীয়রা : উৎসবের আবহ


দেবব্রত মন্ডল ( বাঁকুড়া ) :  মল্লরাজা বীরহাম্বীর রাসমঞ্চ অভিনব শৈলের স্থাপত্যটি আনুমানিক ইংরাজী ১৬০০ খ্রীষ্টাব্দে এই রাসমঞ্চ স্থাপন করেন । 
পিরামিডাকৃতি সৌধটি বাংলার আর কোথাও দেখতে পাওয়া যাবে না । এই মন্দির সৌধটিতে নির্দিষ্ট কোন দেবতাকে প্রতিষ্টিত করা হয়েছিল বলে জানা যায় নি । তবে এখানে বিষ্ণুপুরের বিভিন্ন মন্দিরের রাধাকৃষ্ণের মূর্তি আনয়ণ করে যে বিশাল রাসােৎসব পালন করা হত সে বিষয়ে সন্দেহ নেই । বর্তমানকালে ও  এই বিশালাকার সৌধটি মাথা উঁচু করে বিষ্ণুপুর মল্লরাজাদের গৌরবান্বিত অধ্যায়ের কথা দূরাগত পর্যটকদের কাছে ঘােষণা করছে । বিষ্ণুপুর শহরের মধ্যভাগে মহকুমা শাসকের করণ ও রবীন্দ্র স্ট্যাচুর পাশ দিয়ে পূর্বদিকে যে রাস্তা রামানন্দ কলেজের দিকে সােজা চলে গেছে সেই রাস্তার প্রায় এক কিলােমিটার দূরত্বে গিয়ে বাম দিকে তাকালে বিরাট পাহাড় প্রমাণ সৌধটি দেখতে পাওয়া যাবে খােলা আকাশের নিচে দাড়িয়ে আছে ।কথিত আছে কোন এক বৎসর ঐ রাসমঞ্চে রাস উৎসব পালন করার সময় বজ্রপাতে রাসমঞ্চ এর একাংশ ভেঙে যায় । তখন থেকেই এই রাস মন্দিরে রাস উৎসব বন্ধ হয়ে যায় । এরপর রাসমঞ্চ থেকে রাস উৎসব নিয়ে যাওয়া হয় বিষ্ণুপুর রাজ দরবারে সেখানে কয়েক বছর রাস উৎসব পালন হওয়ার পর আনুমানিক ১৮৫০ সালে রানী চূড়ামণি দেবী বিষ্ণুপুরের মাধব গঞ্জে মদন গোপাল মন্দির স্থাপন করেন তারপর থেকে এই মদন গোপাল মন্দিরে রাস উৎসব পালিত হয়ে আসছে । বর্তমানে বিষ্ণুপুর এবং তার আশেপাশে থেকে আসা ৩৬ জোড়া রাধা কৃষ্ণের বিগ্রহকে বিশেষ সাজে সাজিয়ে রাধামদন গোপাল জিউয়ের মন্দিরে আনা হয়। পাঁচ দিন ধরে এখানে বিশেষ পুজাপাঠ ও সব কটি বিগ্রহকে আলাদা আলাদাভাবে সন্ধ্যারতি করা হয় । 

রাস উৎসব উপলক্ষ্যে ফি বছর প্রচুর দর্শনার্থীরা ‘গুপ্ত বৃন্দাবন’ বলে খ্যাত বিষ্ণুপুরে হাজির হন । আলোর রোশনাই, পাঁচ দিন ধরে নানান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আর রাস মেলাকে কেন্দ্র উৎসবে মাতোয়ারা হয়ে থাকতেন এক সময়ের মল্ল রাজাদের প্রাচীণ এই রাজধানী । তবে করুণাময় পরিস্থিতিতে আলোর রশ্মি থাকলেও সেই চেনা ভিড় আর নেই থাকছে না কোন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও নম নম করেই সাড়তে হচ্ছে রাস-উৎসব।





Others News

মল্লরাজ ভূমিতে তোপধ্বনিতে অষ্টমীর সন্ধিক্ষণ : পুজো ঘিরে উন্মাদনা

মল্লরাজ ভূমিতে তোপধ্বনিতে অষ্টমীর সন্ধিক্ষণ : পুজো ঘিরে উন্মাদনা


দেবব্রত মন্ডল ( বাঁকুড়া ) : তোপধ্বনি তে কেঁপে উঠল বিষ্ণুপুর । শুরু হল মল্ল রাজাদের ১০২৫ বছরের অষ্টমী পূজোর সন্ধিক্ষণ।

প্রাচীণ ঐতিহ্য ও পরম্পরা মেনে আজও নিষ্ঠাভরে বিষ্ণুপুর রাজ বাড়িতে দেবী দুর্গা 'মৃন্ময়ী নামে পূজিতা হন। জানা গিয়েছে, পূর্ব প্রথা মতোই প্রাচীণ রীতি মেনে মহাষ্টমীর সন্ধিক্ষণে কামান দাগার মধ্য দিয়ে বিষ্ণুপুর রাজ বাড়িতে শুরু হয়ে গেল 'বড় ঠাকরুনে'র পুজো। তবে এবার করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও দর্শক সাধারণের উপস্থিতি ছিল বাঁধভাঙ্গা। সরকারী নিয়মকে মান্যতা দিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুরু হয়েছে দেবী বন্দনা। এমনকি এখানে কামান দাগার পর্বেও অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছরে অল্প সংখ্যক লোককে নিয়ে ঐ কাজ সম্পূর্ণ করা হয়েছে।

শুরুর সময় থেকে অষ্টমীর সন্ধিক্ষণ ঘোষণা করা হয় বড় কামানের গর্জনের শব্দে। যার আওয়াজে রাজবাড়িতে আরতি নৃত্যও শুরু হয়ে যায়।